রুম না পেয়ে সৈকতে পর্যটক, সাগরে মল ত্যাগ করছেন অনেকে।

Share now:

পর্যটকের ঢল নেমেছে সৈকতের শহর কক্সবাজারে। ভরা পর্যটন মৌসুমের পাশাপাশি ২১ ফেব্রুয়ারির ছুটির দিন হওয়ায় কক্সবাজার লাখো পর্যটকের পদচারণায় আনন্দ-উচ্ছ্বাসের নগরীতে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার। তবে অনেকেই হোটেলে রুম না পেয়ে লাগেজ বা ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছে বালিয়াড়ির কিটকটে।

অনেক ভ্রমণপিপাসু বলছেন, রুম না পেয়ে কক্সবাজার ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি আর বৃহস্পতিবার একদিনের ছুটি নিলে সাপ্তাহিক ছুটিসহ দাঁড়ায় টানা ৪ দিনের ছুটি। এই ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকের ঢল নেমেছে সৈকত শহর কক্সবাজারে।

বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, বালিয়াড়িতে ভিড় করেছে লাখো পর্যটক। বালিয়াড়ির সামনে নীল জলরাশিতেও মানুষের ভিড়। সবাই মেতেছেন বাধভাঙ্গা আনন্দ-উল্লাসে।

এদিকে হোটেলে রুম ভাড়া না পেয়ে ব্যাগ ও লাগেজ নিয়ে অনেক পর্যটক বালিয়াড়িতেই অবস্থান করছেন, অনেকে সাগর তীরে। কেউ কেউ সড়কে পায়চারী করে সময় পার করছেন। তবে হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ ও যানবাহনের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন পর্যটকরা।

কুমিল্লা থেকে আগত পর্যটক মোহাম্মদ মির বলেন, সকালে বাস থেকে কলাতলীতে নামি। এর পর হোটেলের খোঁজাখুঁজি করলেও রুম পাইনি। তবে একটি কটেজে রুম পেয়েছি সেটার দাম ৭ হাজার টাকা চায়। রুমের অবস্থাও ভালো না।

রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক ইমতিয়াজ বলেন, সকালে কক্সবাজার পৌঁছানোর পর অনেক হোটেলে গিয়েছি কিন্তু কোথাও রুম পায়নি। শেষমেশ সৈকতের বালিয়াড়িতে লাগেজ ও ব্যাগ নিয়ে বসে আছি। যদি কোনো রুম পাই তাহলে আজকে থেকে যাব, না হয় রাতের গাড়িতে রাজশাহী ফিরে যাব।

ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক এনামুল হক বলেন, এতো মানুষ কক্সবাজার সৈকতে আর দেখিনি। বালিয়াড়িতে যেমন মানুষ, ঠিক তেমনি নোনাজলেও মানুষে ভরপুর। আরেক পর্যটক শায়ান রহমান বলেন, খুব মজা হচ্ছে। এতো মানুষ একসঙ্গে আনন্দ করছি।

আবুল হোসেন নামের আরেক পর্যটক বলেন, সাগরের নোনাজলে যেমন মজা পাচ্ছি ঠিক তেমনি বালিয়াড়িতে বালু নিয়ে খেলা করতে ভালো লাগছে।

ব্যবসায়ী ও পর্যটকের দেয়া তথ্য বলছে, ছুটি মানেই কক্সবাজারে বাড়তি মানুষের চাপ। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। ৫ শতাধিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট এখন পর্যটকে ঠাঁসা। অনেকেই রুম না পেয়ে লাগেজ বা ব্যাগ নিয়ে অবস্থান করছেন সৈকতের বালিয়াড়িতে। তারা বলছেন, রুম না পেয়ে কক্সবাজার ছাড়তে হচ্ছে তাদের।

সাগর কিছুটা উত্তাল। বেড়েছে ঢেউয়ের পরিধি। তাই সমুদ্র স্নানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সচেতনতার পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে লাইফ গার্ড কর্মীরা।

সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার ইনচার্জ মোহাম্মদ ওসমান বলেন, প্রচুর মানুষ। তাদের বেশির ভাগই সাগরে গোসল করছে। তাই সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তায় কয়েক স্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আগামী শনিবার পর্যন্ত টানা ছুটিতে কক্সবাজারে ৫ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হবে বলে জানিয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানান, কক্সবাজার সৈকতের নিকটবর্তী ৫ শতাধিক হোটেলে-মোটেলের কোনো কক্ষ খালি নেই। হোটেলের কক্ষ খালি না পেয়ে অনেকে ছুটছেন শহরের দিকে।

অতিরিক্ত দাম আদায়ের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এটি আমার জানা নেই। তবে যেসব হোটেলের বিরুদ্ধে পর্যটক অভিযোগ করবে অভিযোগের প্রমাণ মিললে সদস্য পদ বাতিল করা হবে।

টুরিস্ট পুলিশ অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশ তৎপর আছে। পর্যটক হয়রানির অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Scroll to Top