সরকারবিরোধী এক দফার আন্দোলনে ব্যর্থতার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশের মধ্যে এখন মোটা দাগে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। একটি হচ্ছে, নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক ছিল বা বর্তমান বাস্তবতায় গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন সম্ভব কি না। অন্যটি হচ্ছে, বিএনপির প্রধান নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বের সক্ষমতা ও দেশ-বিদেশে তাঁর গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেশে-বিদেশে তারেক রহমানের গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নটি বেশি আলোচিত। দলটির অনেকে মনে করেন, সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বা প্রভাবশালী মহলের মধ্যে তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাঁর প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশের মনোভাব ইতিবাচক নয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোও তাঁর ব্যাপারে কতটা ইতিবাচক, সেই প্রশ্নেও আলোচনা রয়েছে দলটিতে।
খালেদা জিয়া অসুস্থ। দলের প্রধান নেতা তারেক রহমানও দেশে নেই। তিনি যুক্তরাজ্য থেকে দল পরিচালনা করছেন। তাঁর নির্দেশনামতোই আন্দোলন-কর্মসূচি সংঘটিত হয়।
সরকারের দিক থেকে নানা চাপ ও প্রলোভন সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত বিএনপি ভাঙেনি। তবে আন্দোলনে ব্যর্থতা নেতাদের পরস্পরের মধ্যে সন্দেহ-অবিশ্বাস বাড়িয়েছে। বিশেষ করে গত ২৮ অক্টোবরের পর দলে তিন ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ অনেক নেতা-কর্মী কারাবন্দী হন। কেন্দ্রীয় ও মাঠপর্যায়ের বড় অংশটি আত্মগোপনে যায়। রুহুল কবির রিজভীসহ অল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীকে প্রকাশ্যে কর্মসূচিতে দেখা যায়।
আন্দোলনে ব্যর্থতা, বিএনপিতে নানা প্রশ্ন
এ পরিস্থিতিতে বিএনপি-সমর্থক বুদ্ধিজীবী, যুগপৎ আন্দোলনরত জোটের নেতা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, দলের ভেতরকার দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে এবং বাইরের ঝুঁকিগুলো সামলে আগামী দিনে রাজনৈতিক সুযোগগুলো বিএনপি কতটা কাজে লাগাতে পারবে, তার ওপর নির্ভর করছে দলটির ভবিষ্যৎ।
বিএনপির নেতৃত্বের একাংশ মনে করেন, বিরোধী দলের আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ না পাওয়ার আরেকটি কারণ মানুষের রাজনীতিবিমুখ মনোভাব। জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের মধ্যে সরকারের প্রতি ক্ষোভ থাকলেও তাদের সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি।